সম্পাদক

আবদুর রহমান

দাম বৃদ্ধির পরেও নিত্যপণ্যের বাজারে তেল-চিনির সরবরাহ সংকট শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বোতলজাত সয়াবিনে লিটারে ১২ টাকা এবং প্যাকেটজাত চিনির দাম কেজিতে ১৩ টাকা বাড়ানোর দুইদিন পরেও মিলছে না পণ্য। 

শনিবার, রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউনহল কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার খুচরা মুদি দোকান ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে বোতলজাত তেল এবং চিনি নেই। দুই একটি দোকানে তেল, চিনি পাওয়া গেলেও বিক্রেতারা দাম হাঁকছেন লিটার বা কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি।

হাতে গোনা যে দুই একটি দোকানে প্যাকেটজাত চিনি মিলছে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকারও বেশি দরে। এর বিপরীতে খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে। 

আগের দরে বোতলজাত ১ লিটার সয়াবিন তেল পাওয়া গেলেও তা বিক্রি হচ্ছে ২ থেকে ৩ টাকা বেশিতে। দাম বাড়ানোর পরেও কেন পণ্য মিলছে না এ প্রশ্নের জবাবে মোহাম্মদপুর টাউনহল কাঁচাবাজারের মুদি পণ্য বিক্রেতা আলমগীর হোসেন বলেন, ‘কোম্পানির লোক পণ্যে অর্ডার নিয়ে আজ দিচ্ছি কাল দিচ্ছি বলে এখনও তেল-চিনি দেয় নাই। দাম বাড়ছে তারপরও পণ্য পাচ্ছি না। দোকানে মাল না থাকলে ক্রেতারা এসে ফেরত যাচ্ছে। আর ফেরত গেলে লোকসান হয়, কারণ একটা পণ্যের সঙ্গে অন্যান্য পণ্য বিক্রি করা যায়। যখন তেল বা চিনি দিতে পারি না তখন ক্রেতা চলে যায়।’

আরেক বিক্রেতা মোজাম্মেল মিয়া বলেন, ‘দোকানে তেল চিনি কোনোটাই নাই। আজকে আশা করি মাল পাব। পণ্যের গায়ে লেখা দামে বিক্রি করতে সুবিধা হয়। এতে ক্রেতাদের সঙ্গে ঝামেলা পোহাতে হয় না। দাম যেভাবে নির্ধারিত হইছে ওইভাবেই বিক্রি করব। তা না হলেতো জরিমানা গুনতে হবে। মালের সরবরাহ ঠিক থাকুক।’

দোকানে পাঁচ লিটার বোতলজাত তেল কিনতে এসে না পেয়ে আরিফ তালুকদার প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘কী একটা মুশকিলে পড়লাম। বাজারে পাঁচ লিটারের বোতলের তেলই নাই। এভাবে চলতে থাকলে কেমন হবে। এরমধ্যে বাড়াইছে তেল চিনির উভয়েরই দাম। দাম না বাড়িয়ে কমানো উচিৎ।’

আরেক ক্রেতা রাকিব বলেন, ‘চিনিইতো পাচ্ছি কয়েকদিন ধরে। যা পাওয়া যায় তার দাম কেজিতে ৩০ টাকারও বেশি চাচ্ছে। এভাবে দাম চাইলে কিনে খাওয়া যায়?’ তেল চিনির সরবরাহ সংকট রয়েছে রাজধানী ঢাকার বাইরেও। ঢাকার অদূরে সাভারের আমবাগান বাজারে দেখা যায়, খুচরা মুদি দোকানগুলোতে তেল, চিনি নেই।

এ বিষয়ে মুদি পণ্য বিক্রেতা আব্দুল হান্নান প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘তেল এবং চিনি কোনোটাই এখন দোকানে নেই। কোম্পানির লোককে বলেছি, এখন দেখি কবে নাগাদ মাল পাওয়া যায়।’ 

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ চিনি রিফাইনার অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন থেকে পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, প্রতি কেজি প্যাকেটজাত চিনিতে ১৩ টাকা এবং প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলে ১২ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এতে প্যাকেটজাত প্রতি কেজির দর ওঠে ১০৮ টাকায়, যা আগে ছিল ৯৫ টাকায়। আর বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯০ টাকা, যার আগের দাম ছিল ১৭৮ টাকা। এতে ৫ লিটার সয়াবিন তেলে ৪৫ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯২৫ টাকায়। এ ছাড়াও খোলা সয়াবিন তেলে বাড়ানো হয়েছে ১৪ টাকা। নতুন দর অনুযায়ী খোলা সয়াবিন তেলে বিক্রি হবে ১৭২ টাকা, যা এতদিন বিক্রি হয়ে এসেছিল ১৫৮ টাকা দরে।