সম্পাদক

কোনো কিছুর ওজন ও পরিমাপের জন্য আমরা কিলো বা মিলি ইত্যাদি ইউনিট ব্যবহার করি। এ ইউনিটগুলো দিয়ে বিশাল কোনো কিছুর ওজন বা পরিমাপ করলে সংখ্যাটি অনেক বড় হয়ে যায়, যা সমস্যা তৈরি করে।  তাই পৃথিবী বা অন্য কোনো অতিকায় বস্তু এবং পরমাণুর মতো ক্ষুদ্রতর বস্তু সহজে ওজন ও পরিমাপ করার জন্য নতুন ইউনিট নির্ধরণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। 

গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অতিকায় ও অতিক্ষুদ্র বস্তুর পরিমাপ ও ওজনের হিসাব সহজ করার জন্য নতুন চারটি একক নির্ধারণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। এগুলো হলো– রোনা, কোয়েটা, রোন্টো ও কোয়েক্টো। এর মধ্যে রোনা ও কোয়েটা বৃহৎ বস্তুর জন্য। আর রোন্টো ও কোয়েক্টো অতিক্ষুদ্র বস্তুর জন্য। 

শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে ‘২৭তম ওজন এবং পরিমাপের সাধারণ সম্মেলন’ উপস্থিত বিজ্ঞানীদের সর্বসম্মতিতে এ সিদ্ধান্ত হয়। ফলে এখন থেকে চারটি নতুন উপসর্গ (প্রেফিক্স) আন্তর্জাতিক সিস্টেম অব ইউনিট (এসআই) হিসেবে ব্যবহার করা হবে। 

নতুন সিদ্ধান্তের পর কেউ যখন বলবে, রোনোগ্রাম, তার অর্থ একের পর ২৭টি শূন্য হবে। ঠিক কিলোগ্রামের মতো। অর্থাৎ ১ কিলোগ্রাম বলতে যেমন ১০০০ হাজার গ্রাম বা ১ এর পর তিনটা শূন্য। ঠিক তেমনি ১ রোনোগ্রাম মানে একের পর ২৭টি শূন্য। 

আর ১ কোয়েটাগ্রাম মানে ১ এর পর ৩০টি শূন্য। অনুরূপভাবে রোনোমিটার, কোয়েটাভল্ট ইত্যাদিতে একইভাবে গণনা করা হবে। প্রায় তিন দশক পর নতুন ইউনিট নির্ধারণ করল এসআই। 

নতুন এসব ইউনিটের প্রস্তাব করেন লন্ডনের ন্যাশনাল ফিজিক্যাল ল্যাবরেটরিতে মেট্রোলজির প্রধান ড. রিচার্ড ব্রাউন। বার্তা সংস্থা এএফপিকে ব্রাউন বলেন, ‘প্রযুক্তি ইন্ডাস্ট্রি বিশাল ডেডা পরিমাপ করার জন্য ইয়োটাবাইট এবং জেটাবাইট ইত্যাদি ইউনিট ব্যবহার করছে। এগুলো এতটা বৈজ্ঞানিক নয়। এ অবস্থায় নতুন ইউনিটের ভাবনা মাথায় এল।’ 

এ বিজ্ঞানী বলেন, ‘নতুন ইউনিটের হিসেবে পৃথিবীর ওজন দাঁড়াবে প্রায় ছয় রোনোগ্রাম। আর বৃহস্পতির গ্রহের ওজন আনুমানিক দুই কোয়েটাগ্রাম। 

আর ক্ষুদ্রতর বস্তু ওজন বা পরিমাপের জন্য রোন্টো ও কোয়েক্টোকে ঋণাত্মকভাবে ব্যবহার করা হবে। অর্থাৎ রোন্টোগ্রাম বলতে দশমিকের পর ২৭টা শূন্যের পর ১ হবে। আর কোয়েক্টোগ্রামের ক্ষেত্রে দশমিকের পর ৩০টা শূন্যের পর ১ হবে। 

নতুন এসব ইউনিট বিভিন্ন গবেষণায়, বিশেষ কোয়ান্টাম ফিজিক্সের ক্ষেত্রে হিসেবকে সহজতর করবে। তবে ২০ থেকে ২৫ বছর পর আবার পরিমাপের নতুন ইউনিট নির্ধারণ করা লাগবে বলে মনে করেন রিচার্ড ব্রাউন। কিন্তু আগামীতে নতুন ইউনিটের নামকরণে জটিলতা তৈরি হতে পারে। কারণ নতুন ইউনিট নির্ধারণের জন্য আর ইংরেজি বর্ণমালা বাকি নেই।