সম্পাদক
আবদুর রহমান
ষ্টাফ রিপোর্টার:
আমন ধান ঘরে তোলা শেষে অধিক লাভের আশায় আগাম আলুর আবাদে নেমে পড়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের চাষিরা। হিমাগার থেকে বীজ উত্তোলন, জমি তৈরি, আগাছা পরিষ্কার, সার প্রয়োগ এবং প্রস্তুতকৃত জমিতে আলু রোপণের কাজে ব্যস্ত চাষিরা। তবে, সময়মতো ও ন্যায্য মূল্যে রাসায়নিক সার না পাওয়ায় চাষিরা পড়েছেন বিপাকে।জেলার সব উপজেলাতেই পুরোদমে চলছে আলু আবাদের প্রস্তুতি। জমি তৈরি করে বিভিন্ন জাতের বীজ আলু কেটে প্রস্তুত করার পর রোপণ করা হচ্ছে। চলছে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ প্রতিরোধে কীটনাশক স্প্রেও। পুরোপুরি ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক ও বাণিজ্যিকভাবে আলুচাষিরা। তবে রাসায়নিক সারের দাম ও পর্যাপ্ত পরিমাণে সার না পাওয়ায় কৃষকদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। চাষিদের অভিযোগ, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও তারা সার পাচ্ছেন না। আর খুচরা বাজারে সারের দ্বিগুণ দাম।আলু চাষি মোঃ রমজান আলী বলেন, খুচরা বাজারে পটাশ সারের ৫০ কেজির বস্তা ১৬০০ টাকা, ইউরিয়া ১ হাজার, ডেপ ১২০০ টাকা করে বিক্রয় হচ্ছে। তারপরেও পটাশ সার পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি অভিযোগ করেন, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও সার পাচ্ছি না। বড় বড় কৃষকরা সার পাচ্ছে। আর আমার মতো ক্ষুদ্র কৃষকরা সার পাচ্ছে না।সদরের ফেলানপুর গ্রামের নূর ইসলাম নামে আরেক চাষি বলেন, আলু চাষ করতে চেয়েছিলাম ২ একর। কিন্তু সারের কারণে এখন ১ একর জমিতে আলু রোপন করছি। এভাবে চলতে থাকলে আমরা কিভাবে কৃষি করবো। দামও বেশি হলেও সার পাওয়া যাচ্ছে না।নারগুন এলাকার চাষি ফারুক হোসেন বলেন, এবার সারসহ অন্যান্য কিছুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় একর প্রতি আলু চাষে ১০-১৫ হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। শিবগঞ্জ বিএডিসির উপ-সহকারী পরিচালক (সার) জিল্লুর রহমান বলেন, সারের চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম। বরাদ্দ পেলে সার সরবরাহ করা হবে। সারের বিষয়ে সরকারের যথেষ্ট অগ্রগতি আছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মতে, গত বছর আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছিল ২৭ হাজার হেক্টর জমি। কিন্তু এবার তার থেকে প্রায় ২ হেক্টর কম লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ এবার লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ হাজার ৩০ হেক্টর জমি। এর মধ্যে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে আলু রোপন সম্পন্ন হয়েছে।অন্যদিকে জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা ড. আব্দুল আজিজ বলছেন, সারের কোনো সংকট নেই। কৃষকরা মনে করছেন পরবর্তীতে তারা আর সার পাবেন না। তাই এখন থেকেই সার মজুদ করতে হুমড়ি খাচ্ছেন তারা। সারের জন্য আলু বা অন্য কোনো ফসলের ক্ষতি হবে না। যারা সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রয় করছেন তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে ও সারের বাজার মনিটরিং অব্যাহত আছে বলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোঃ শামসুজ্জামান জানান।