স্টাফ রিপোর্টারঃ
ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করায় বিভাগীয়ভাবে বিশেষ সম্মাননা স্মারক
পেলেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সেরাজুল হক। গত
শনিবার জেলা পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভায় ভালো কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ রংপুর
রেঞ্জের ডিআইজির পক্ষে জেলা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম সেরাজুল
হকের হাতে বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেন। এরআগে গত ১৬ নভেম্বর
বিভাগীয় ভাবে বিশেষ সম্মাননা স্মারকে ভূষিত করা হয় তাকে। গত অক্টোবর মাসের
১৯ তারিখ রাতে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম পরান গ্রামের মৃত এনায়েত উল্লার ছেলে
খলিলুর রহমান (৫০)’র অটো ভ্যান ভাড়া করে বামনডাঙ্গার দিকে রওয়ানা করে
যাত্রীবেশে ৩ ছিনতাইকারী। পরদিন একই উপজেলাধীন রামজীবন ইউনিয়নের পশ্চিম
রামজীবন গ্রাম এলাকায় একটি কঁাচা রাস্তার পাশে ধান ক্ষেতে খলিলুর রহমানের লাশ
পাওয়া গেলেও তার ব্যাটারি চালিত অটোভ্যান পাওয়া যায়নি। এ সংবাদ পেয়ে পুলিশ
পরিদর্শক (তদন্ত) সেরাজুল হক চার্জ অফিসার হিসেবে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে
মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ
করেন। এঘটনায় খলিলুরের আপন বড় ভাই জলিল মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের
বিরুদ্ধে মামলা করেন। যার মামলা নং ১৪, ধারা ৩০২/৩৯২/৩৪ পেনাল কোড। এ মামলা
তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় এসআই তারেকুল তওফিককে। এটি একটি ক্লুলেস
হত্যাকাণ্ড ও সেনসেটিভ ইস্যু হওয়ায় সেরাজুল হক নিজেই মাঠে থাকেন। এরপর ২৪
ঘন্টার মধ্যেই অটোভ্যানটি উদ্ধার করতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে এই হত্যাকাণ্ডে
জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতারের বিভিন্ন জায়গায় সঁাড়াশি অভিযান
পরিচালনা করা হয়। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গুপ্তচরের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই করে
সামগ্রিক তদন্তে দুই অপরাধীকেকে শনাক্ত করে ২২ অক্টোবর সন্ধ্যায় গংশারহাট
এলাকা থেকে রানা নামে এক অপরাধীকে গ্রেফতার করে। পরদিন ভোররাতে মাস্টারের
মোড় এলাকা হতে অপর অপরাধী মোশারফ হোসেনকে তার বোনের বাড়ি থেকে
গ্রেফতার করে। এরপর উভয় আসামিকে একত্র করে তাদের বক্তব্য বক্তব্য যাচাই কালে তারা
উভয়ে ওই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি অকপটে স্বীকার করে। বিজ্ঞ
আদালতে সোপর্দ করা হলে তারা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।
এই ক্লুলেস মামলায় আসামি গ্রেফতার হওয়ায় নিহত খলিলুরের পরিবারসহ স্থানীয়
লোকজন অত্যন্ত খুশি হন এবং অনেকেই পুলিশকে ধন্যবাদ জানান। এব্যাপারে
পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সেরাজুল হক বলেন, এমামলায় আরও একজন আসামি পলাতকরয়েছে। তাকেও গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও বলেন ভালো কাজের
স্বীকৃতি পাওয়ায় কাজের আগ্রহসহ মনোবল বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কোনো ভালো
কাজের পুরস্কারই কর্মস্পৃহা বাড়িয়ে দেয়। এই ধারা অব্যাহত রাখবেন বলে তিনি দৃঢ়
অঙ্গীকার ব্যাক্ত করেন।