নিউজ ডেস্ক :
একের পর এক অঘটের জন্ম দিচ্ছে এশিয়ার দেশ জাপান। ২০১০ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেনকে হারিয়ে গ্রুপ-ই থেকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নকআউটে উঠে গেছে জাপান। এবারের আসরে এটি জাপানের দ্বিতীয় অঘটনের ঘটনা। এর আগে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে তারা দিয়েছে পরাজয়ের স্বাদ।
তিন ম্যাচ থেকে ৬ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে জাপান, ৪ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে স্পেন, তৃতীয় স্থানে জার্মানি আর ৩ পয়েন্ট নিয়ে একেবারে শেষ স্থানে রয়েছে সাবেক রানার্সআপ কোস্টারিকা।
জার্মানিকে হারানোর পর অনেকেই মনে করেছিলেন, জাপানের জয় নেহাতই একটি দুর্ঘটনা মাত্র! কিন্তু কয়েক দিনের ব্যাবধানে স্পেনকে হারিয়ে জাপান বুঝিয়ে দিল, জার্মানির বিরুদ্ধে জয় কোনো অংশেই দুর্ঘটনা ছিল না। জাপান বুঝিয়ে দিল এশীয় দেশগুলোও ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই করার জায়গায় চলে এসেছে।
প্রথমার্ধে স্পেনের পাসিং ফুটবলে কিছুটা গুটিয়ে গেলেও, দ্বিতীয়ার্ধে জাপান দেখিয়ে দিল প্রেসিং ফুটবল কাকে বলে! দ্বিতীয়ার্ধজুড়ে আক্রমণ করে গেলেন জুনিয়া ইতো, ইউরি নাগাতোমো, হিদেমাসা মোরিতারা। স্পেনকে খেলার জায়গাই দিলেন না তারা। প্রথমার্ধে যে পাসিং ফুটবলে দাপট দেখাচ্ছিল স্পেন, দ্বিতীয়ার্ধে তা উধাও!
খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই চিরচেনা রূপে স্পেন। বলের দখল নিজেদের কাছে গোলমুখ উন্মোচনের চেষ্টা করে তারা। বিপরীতে জাপানের পরিকল্পনা ছিল পাঁচজনকে নিচে রেখে প্রতি-আক্রমণ থেকে সুযোগ তৈরির চেষ্টা করা।
তবে জাপানের এই কৌশল মুখ থুবড়ে পড়ে ম্যাচের ১১ মিনিটেই। দারুণ এক আক্রমণে গোল করে এগিয়ে যায় স্পেন। সেজার এজপিলিকুয়েতার মাপা ক্রসে হেড দিয়ে লা ফুরিয়া রোহাদের এগিয়ে দেন আলভারো মোরাতা। এবারের প্রতিযোগিতায় তৃতীয় গোল করেন মোরাতা। নেদারল্যান্ডসের কোডি গাকপোর মতো গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচেই গোল করেন তিনি।
এর পরে স্পেনের দাপট আরও বেশি করে টের পাওয়া যায়। মাঝমাঠে আরও বেশি পাস খেলতে থাকেন রদ্রি, পাউ তোরেসরা। ২৬ মিনিটে সুযোগ পায় স্পেন। মোরাতার থেকে বল পেয়ে শট নিয়েছিলেন দানি ওলমো। তা বাইরে যায়। তবে মোরাতা অফসাইডে থাকার কারণে গোল হলেও বাতিল হয়ে যেত।
প্রথমার্ধে আর কোনো গোল হয়নি। তবে স্পেনের পাসের আধিপত্য দেখেও থমকে যায়নি জাপান। প্রতিটি বল তারা মোকাবিলা করেছে। স্পেনের ফুটবলারদের জায়গা দিতে চায়নি। কোণ ছোট করে এনেছে। সেই সুফল তারা পেয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। বিরতিতে তাকেফুসা কুবোকে তুলে রিৎসু দোয়ানকে নামান জাপানের কোচ হাজিমে মোরিয়াসু। সেই কৌশল কাজে দেয় সঙ্গে সঙ্গেই।
দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান জাপানিরা। তিন মিনিটের ব্যবধানে গোল করেন দেওয়ান-তানাকা। এর পর বারবার আক্রমণ গড়েও সমতা ফেরাতে পারেননি স্প্যানিশরা।
জাপান যখন এগিয়ে, তখন আল বাইত স্টেডিয়ামে অপর ম্যাচে জার্মানির বিপক্ষে এগিয়ে যায় কোস্টারিকা। তৈরি হয় ২০১০ আসরের চ্যাম্পিয়নদের বাদ পড়ার পরিস্থিতিও। তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতে নেয় জার্মানি। ফলে চার পয়েন্ট নিয়ে ‘ই’ গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলোতে নাম লেখায় স্পেন। সমান পয়েন্ট নিয়েও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যায় হেভিওয়েট জার্মানি। অন্যদিকে ছয় পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপসেরা হয়ে নকআউটে পা রাখে জাপান।