স্টাফ রিপোর্টারঃ
কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি

৭ ডিসেম্বর বুধবার কক্সবাজার গেছেন প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘সীমানা ছাড়িয়ে বন্ধুত্ব’ প্রতিপাদ্যে এই প্রদর্শনী বুধবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া, একই সময় উদ্বোধন করেন নবনির্মিত নেভি জেটি।

বাংলাদেশসহ ২৮ দেশের ৪৩টি যুদ্ধজাহাজ, ২টি বিএন এমপিএ, ৪টি বিএন হেলিকপ্টার অংশ নিয়েছেন মহড়ায়। এতে অংশ নেন, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, মিশর, নাইজেরিয়া, সুদান, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, তিমুর-লেস্তে থেকে নৌ প্রতিনিধিরা। মহড়ায় ইরান, ওমান, ফিলিস্তিন ও সৌদি আরবের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

এরপরই বিকালে কক্সবাজার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আয়োজিত সমাবেশ স্থলে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে ২৯টি প্রকল্প উদ্বোধন করেছি। প্রকল্পগুলো হচ্ছে- কক্সবাজার গণপূর্ত উদ্যান, বাহারছড়া বীর মুক্তিযোদ্ধা মাঠ, কুতুবদিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ভবন, পেকুয়া উপজেলা ভূমি অফিস ভবন, কক্সবাজার জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় ভবন, শেখ হাসিনা জোয়ারিয়ানালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের চারতলা একাডেমিক ভবন, আবদুল মাবুদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের চারতলা একাডেমিক ভবন, মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের চার তলা একাডেমিক ভবন, কক্সবাজার জেলার লিংক রোড-লাবনী মোড় সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ, রামু-ফতেখাঁরকুল-মরিচ্যা জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ, টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ জেলা মহাসড়কের হাড়িয়াখালী থেকে শাহপরীরদ্বীপ অংশ পুনর্নির্মাণ, প্রশস্তকরণ এবং শক্তিশালীকরণ, বাঁকখালী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ; নিষ্কাশন; সেচ ও ড্রেজিং প্রকল্প (১ম পর্যায়), শাহপরীরদ্বীপে সী ডাইক অংশে বাঁধ পুনঃনির্মাণ ও প্রতিরক্ষা কাজ, ক্ষতিগ্রস্ত পোল্ডার সমূহের পুর্নবাসন প্রকল্প, রামু কলঘর বাজার-রাজারকুল ইউপি সড়কে বাঁকখালী নদীর উপর ৩৯৯ মিটার দীর্ঘ সাংসদ ও রাষ্ট্রদূত ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরী সেতু, কক্সবাজার জেলায় নবনির্মিত ৬ টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস ভবন, ৪টি উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন (রামু, টেকনাফ, মহেশখালী ও উখিয়া), কক্সবাজার পৌরসভার এয়ারপোর্ট রোড আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, শহিদ সরণি আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়াম সড়ক আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, নাজিরারটেক শুটকি মহাল সড়ক আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, টেকপাড়া সড়ক আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, সী বীচ রোড আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, মুক্তিযোদ্ধা সরণি আরসিসিকরণ ও অন্যান্য, সৈকত-স্মরণ আবাসিক এলাকা সড়ক আরসিসিকরণ ও কক্সবাজার নতুন বার এনেক্স ভবন।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ৪ টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য থাকা ৪ প্রকল্প হলো, বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট (২য় পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্প, কুতুবদিয়া উপজেলাধীন ধুরুং জিসি মিরাখালী সড়কে ধুরুংঘাটে ১৫৩ দশমিক ২৫ মিটার জেটি এবং আকবর বলি ঘাটে ১৫৩ দশমিক ২৫ মিটার জেটি নির্মাণ, মহেশখালী উপজেলাধীন মহেশখালী গোরকঘাটা ঘাটে জেটি নির্মাণ, বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্ত নিরাপত্তা উন্নত করার জন্য উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় নাফ নদী বরাবর পোল্ডারসমূহের পুনর্বাসন প্রকল্প।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রিয় জায়গা। তিনি সময় পেলেই কক্সবাজার চলে আসতেন। বিগত সরকারগুলো কক্সবাজারে শুধু শোষন করেছে। লুটেপুটে খেয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে কক্সবাজারকে ঢেলে সাজানোর কাজ হাতে নিয়েছে।

এসময় তিনি কক্সবাজারবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, আগামীতে কক্সবাজারকে সিঙ্গাপুরের আদলে করা হবে। কক্সবাজারের সাধারণ মানুষের জীবন মান উন্নয়ন হবে। আধুনিক বিশ্ব কক্সবাজারকে নিয়ে গর্ব করবে। তিনি বলেন, কক্সবাজারে বারে বারে আসতে মন চায়। কক্সবাজারের অনেক ইতিহাস স্মৃতি বিজড়িত। কবিতার সূরে প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আবার আসিব ফিরে, কক্সবাজার সাগরের তীরে।’