নিজস্ব প্রতিবেদক :

শতভাগ রিসাইকেল্‌ড পিইটি প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি বোতল (ক্যাপ ও লেবেল ব্যতীত) বাজারে নিয়ে এসেছে কোকা-কোলা বাংলাদেশ। সার্কুলার অর্থনীতিকে সমর্থন করার জন্য এটি একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। বর্তমানে কোকা-কোলার কিন্‌লে পানির দুই লিটার বোতলে নতুন এই পিইটি প্যাকেজিং ব্যবহার হচ্ছে। পরবর্তীতে যা কোকা-কোলার অন্যান্য পণ্যের প্যাকেজিংয়েও ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে কোম্পানিটির।
পিইটি বোতলগুলোকে অন্যান্য প্যাকেজিংয়ের অপেক্ষায় তুলনামূলক কম কার্বন ফুটপ্রিন্ট থাকে। যখন পিইটি প্লাস্টিকের বোতলগুলোকে রিসাইকেল করা হয় এবং পুরানো বোতলগুলোক নতুন বোতলে পরিণত করার জন্য এই রিসাইকেল্‌ড উপাদান ব্যবহার করা হয় তখন কার্বন ফুটপ্রিন্টের কম উপস্থিতি দেখা যায়।

প্রতিটি বোতলের এক্সক্লুসিভ লেবেলে একটি সচেতনতামূলক জোরালো বার্তা, “১০০% রিসাইকেল্‌ড প্লাস্টিক থেকে তৈরি” সহ বাজারজাত করা হয়েছে ৷ বাংলাদেশে কোকা-কোলা সিস্টেমের সার্কুলার অর্থনীতি প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নে এবং প্লাস্টিক দূষণ কমাতে সাহায্য করার জন্য নতুন এই প্যাকেজিং একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। রিসাইকেল্‌ড পিইটি প্যাকেজিংয়ের নিরাপত্তা, ফুড-গ্রেডের রিসাইকেল্‌ড পিইটি প্যাকেজিংয়ের ক্ষেত্রে কোকা-কোলা কোম্পানির কঠোর বৈশ্বিক মানদণ্ডের পাশাপাশি দেশের স্থানীয় মানদণ্ডও সম্পূর্ণরূপে মেনে চলে।
গ্রাহকরা সকল পাইকারি দোকানে কোকা-কোলার পণ্যগুলির একই সতেজ স্বাদ পাবেন নতুন এই টেকসই প্যাকেজিংয়েও ।

কোকা-কোলা বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তা জি তুং বলেন, প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিশ্বব্যাপী একটি বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে রিসাইকেল্‌ড পিইটি বোতলগুলিতে কোকা-কোলা পানীয়ের বাজারজাতকরণ বাংলাদেশে একটি সার্কুলার অর্থনীতি প্রতিষ্ঠার সমর্থনে বড় উদ্যোগ। এটি অর্জনের জন্য, চাহিদা মেটাতে আমাদের কাছে ফুড-গ্রেডের রিসাইকেল্‌ড প্লাস্টিকের যথেষ্ট সরবরাহ থাকা অত্যন্ত জরুরী।” তিনি আরও যোগ করেছেন, “এ কারণেই আমাদের বটলিং পার্টনারদের সাথে যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশে কোকা-কোলা সিস্টেম পিইটি প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ ও রিসাইকেলে বিনিয়োগ করছে। আমরা বাজারে যে সমস্ত প্লাস্টিকের বোতল নিয়ে আসি তার সমতুল্য সংগ্রহ ও রিসাইকেল করতে সাহায্য করাই আমাদের মূল লক্ষ্য”

কোকা-কোলা কোম্পানি বিশ্বজুড়ে ‘বর্জ্যমুক্ত পৃথিবী’ গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে ২০৩০ সালের ভিতরে বিক্রিত প্রতিটি বোতল এবং ক্যানের সমতুল্য সংগ্রহ এবং রিসাইকেল করার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এটি কেবল বোতল সংগ্রহ এবং রিসাইকেল করা নয়, প্রতিটি বোতলে ভার্জিন উপাদান ব্যবহারের পরিমাণ কমিয়ে আনাও এর লক্ষ্য। যেমন, কোম্পানিটির ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী প্যাকেজিংয়ে কমপক্ষে ৫০% রিসাইকেল্‌ড উপাদান ব্যবহার করার লক্ষ্য রয়েছে।

কোকা-কোলা বাংলাদেশের অন্যতম বটলার, আবদুল মোনেম লিমিটেডের এএমডি এ.এস.এম মহিউদ্দিন মোনেম বলেন, পিইটি প্লাস্টিক বোতল একাধিকবার ব্যাবহার করা সম্ভব। ফুড-গ্রেড রিসাইকেল্‌ড পিইটি দিয়ে তৈরি আমাদের নতুন বোতলগুলো পুনর্ব্যবহারযোগ্য এবং এই রিসাইকেল্‌ড উপদান দিয়ে আরো বোতল উৎপাদন করা যায়। রিসাইকেল্‌ড পিইটির ব্যবহার সঠিক দিকের একটি বড় পদক্ষেপ এবং এটি পরিবেশ বিভাগ বাংলাদেশের বহু-ক্ষেত্রিক জাতীয় টেকসই প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনার কর্ম পরিকল্পনার পদক্ষেপগুলোর সাথে সম্পৃক্ত। আব্দুল মোনেম লিমিটেড, বাংলাদেশে কোকা-কোলা সিস্টেমের অংশ হিসেবে প্রথম এই পদক্ষেপ নিতে পেরে গর্বিত।

বাংলাদেশে রিসাইক্লিং নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে এবং এরকম আরো পদক্ষেপকে উৎসাহিত করতে, কোকা-কোলা যথাক্রমে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে বর্জ্য প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করতে এস আর এশিয়া এবং কর্ডএইড বাংলাদেশের সাথে কোকা-কোলা ফাউন্ডেশন পার্টনারশিপ করেছে। অতীতে, কোকা-কোলা ফাউন্ডেশন বন্ধন প্রকল্পের জন্য ব্র্যাকের সাথে পার্টনারশিপ করেছিল, যা বর্জ্য শ্রমিকদের জীবনকে উন্নত করার লক্ষে কাজ করেছে। কোকা-কোলা কোম্পানি এখন সারা বিশ্বের ৩০টিরও বেশি বাজারে শতভাগ রিসাইকেল্‌ড পিইটি বোতল অফার করে।