সম্পাদক

আবদুর রহমান

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনান্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অনেকগুলো অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন দেশটির বিচার বিভাগ। এসব তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে এক যুদ্ধাপরাধ বিশেষজ্ঞকে বিশেষ কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। জ্যাক স্মিথ নামের এ কৌঁসুলি বিচার বিভাগের চলমান তদন্ত কমিটির প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। 

বিবিসি ও নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলন করেন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড। এতে জ্যাক স্মিথকে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগের চলমান তদন্তের প্রধান ঘোষণা করেন গারল্যান্ড। 

জ্যাক স্মিথ মূলত দুটি বিষয় তদন্ত করবেন। এক. ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হিলের দাঙ্গায় ট্রাম্পের ভূমিকা। দুই. ট্রাম্পের ফ্লোরিডার বাড়ি মার-এ-লাগোয় যেসব গোপন নথিপত্র পাওয়া গেছে, তাতে আইন লঙ্ঘন হয়েছে কিনা। এ দুটি বিষয় তদন্ত করে জ্যাক স্মিথ যে সিদ্ধান্ত দেবেন, তাই চূড়ান্ত বলে জানিয়েছেন গারল্যান্ড।

সংবাদ সম্মেলনে মেরিক গারল্যান্ড বলেন, ‘সম্প্রতি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার ঘোষণা দিয়েছেন। বর্তমান প্রেসিডেন্টও (জো বাইডেন) একই নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। এসব কিছু ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগের তদন্তকে জটিল করে তুলেছে। এ অবস্থায় জনস্বার্থের কথা ভেবে, একজন স্বাধীন ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে এ তদন্তে বিশেষ কৌঁসুলি নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

গারল্যান্ডের সংবাদ সম্মেলনের কয়েক ঘণ্টার মাথায় জ্যাক স্মিথকে কৌঁসুলি নিয়োগের সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেন ট্রাম্প। এক বিবৃতিতে ট্রাম্প বলেন, ‘এটা ক্ষমতার অপব্যবহারের চরমতম দৃষ্টান্ত। একজন উগ্র বামপন্থীকে বিশেষ কৌঁসুলি নিয়োগের সিদ্ধান্ত বিচার বিভাগের দৈন্যতার প্রকাশ। এ সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’ 

জ্যাক স্মিথ এক সময় নিউইয়র্কের কৌঁসুলির দায়িত্ব পালন করেছেন। অতিসম্প্রতি তিনি নেদারল্যান্ডের আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিজে) কসোভোর গৃহযুদ্ধের তদন্তের প্রধান কৌঁসুলির দায়িত্ব পালন করেছেন। 

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের নির্বাচনে হার মেনে নিতে পারছিলেন না ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার সমর্থকেরা। পরের বছরের ৬ জানুয়ারি দেশটির পার্লামেন্ট কংগ্রেসে (নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ) জো বাইডেনের জয় আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হওয়ার দিন দাঙ্গ শুরু করেন ট্রাম্পের সমর্থকেরা। তারা পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে তাণ্ডব চালান। 

এ ঘটনায় বিচার বিভাগের পাশাপাশি কংগ্রেসেরও একটি তদন্ত চলমান রয়েছে। সদ্য-সমাপ্ত মধ্যবর্তী নির্বাচনে নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে বাইডেনের দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।