নিউজ ডেস্ক :

২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের সবচেয়ে আলোচিত দল ছিল ক্রোয়েশিয়া। একের পর এক চমক দেখিয়ে লুকা মদ্রিচরা পৌঁছে গিয়েছিল ফাইনালে। ফ্রান্সের কাছে ফাইনালে হেরে রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল ক্রোয়েশিয়াকে। চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের মন জয় করে নিয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। কাতার বিশ্বকাপেও চমক দেখাতে এসেছেন মদ্রিচরা। রাশিয়া বিশ্বকাপে ফুটবলপ্রেমীদের মন জয় করে নিয়েছিল তারাও এসেছে চমক দেখাতেই। তবে নিজেদের প্রথম ম্যাচে মরক্কোর বিপক্ষে মাঠে নেমে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি ক্রোটরা। ম্যাচের আগাগোড়া বলের দখল বেশি রেখেও পয়েন্ট পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হল মদ্রিচদের। ম্যাচের ফল গোলশূন্য।

রাশিয়ায় দলকে ফাইনালে তুলতে অবিশ্বাস্য জাদু দেখিয়েছিলেন অধিনায়ক লুকা মদ্রিচ। রিয়াল মাদ্রিদ তারকা জিতেছিলেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। এবারও তাঁর দিকেই তাকিয়ে ছিল ক্রোটরা। কিন্তু ৩৩ বছরের সঙ্গে ৩৭ বছর বয়সের যে পার্থক্য রয়েছে। বয়স বেড়েছে, গতি কমেছে। কিন্তু দক্ষতায় মরচে ধরেনি। বেশ কয়েকবার ঝলসে উঠেছিল মদ্রিচের পা। কাজের কাজ কিছু হয়নি। সাড়ে চার বছর আগে রাশিয়ায় যে জাদুটা দেখিয়েছিলেন, কাতারে তার ছিটেফোঁটা দেখাতে পারলে মরক্কোর পক্ষে পয়েন্ট নিয়ে ঘরে ফেরা সম্ভব হত না। তবু ক্রোয়েশিয়ার ফুটবলারদের মধ্যে নজরে পড়ল একমাত্র মদ্রিচকেই।

শক্তির বিচারে ক্রোয়েশিয়ার থেকে মরক্কো অনেকটাই পিছিয়ে। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ১০ ধাপ। মাঠের লড়াইয়ে এই পার্থক্যটা চোখে খুব একটা চোখে পড়েনি। প্যারিস সাঁ জাঁ–তে মেসি, এমবাপে, নেইমারদের পাশে খেলে নিজেকে অনেকটাই তৈরি করেছেন হাকিম জিয়েচ। মদ্রিচ, পেরিসিচ, ভ্লাসিচ, ভিদা, স্টানিসিচদের সঙ্গে সমানতালে পাল্লা দিয়ে গেলেন ইউসেপ বিন নাসিরি, হাকিম জিয়েচ, সোসারা। ইউরোপের বড় বড় ক্লাবে খেলার অভিজ্ঞতা কাজে লাগালেন। তবে লুকা মদ্রিচকে আটকে আসল কাজটা করে দিয়ে যান সোফিয়ান আমরাবাত।

তার মাঝেই ঝলসে ওঠেন লুকা মদ্রিচ। মাঝমাঠ থেকে ক্রোয়েশিয়ার আক্রমণ তৈরির উৎস ছিলেন তিনিই। প্রথম ১৫ মিনিট ক্রোয়েশিয়ার দাপট ছিল। কিন্তু আক্রমনের তেজ ছিল মরোক্কোর বেশি। দ্রুত গতিতে প্রতিআক্রমণে উঠে আসছিলেন হাকিম জিয়েচ, সেলিম আমাল্লাহরা। সুযোগও তৈরি করেছিল। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি। প্রথমার্ধে মাঝমাঠকে প্রাধান্য দিয়ে খেলে দুই দলই। নিজেদের রক্ষণ দূর্গ সামলে আক্রমনের যাওয়ার চেষ্টা ছিল। তবে ম্যাচের প্রমার্ধের ইনজুরি সময়ে ক্রোয়েশিয়াকে গোল থেকে বঞ্চিত করেন মরক্কোর গোলকিপার ইয়াসিন বুনু। লুকা মদ্রিচের বাড়ানো বলে ছোট বক্স থেক শট নিয়েছিলেন নিকোলা ভ্লাসিচ। কিন্তু মরক্কো গোলকিপার সেই বল আটকান দুর্দান্তভাবে। না হলে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যেতে পারত ক্রোয়েশিয়া।

দ্বিতীয়ার্ধে খেলার মান আরও খারাপ। ক্রোয়েশিয়াকে দখে কখনোই মনে হচ্ছিল না আগের বিশ্বকাপের রানার্স। বরং প্রতি আক্রমণে উঠে এসে মাঝে মাঝেই ক্রোট রক্ষণে হানা দিয়ে যাচ্ছিলেন জিয়েচরা। ৬৫ মিনিটে ৩০ গজ দুর থেকে দুর্দান্ত শট নিয়েছিলেন হাকিমি জিয়েচ। পাঞ্চ করে বল বার করে দেন ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার ডোমিনিক লিভাকোভিচ। প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধেও বলের দখল বেশি ছিল ক্রোয়েশিয়ার। কিন্তু গোলের সুযোগ বেশি এসেছিল মরক্কোর সামনে। একেবারে শেষ দিকে চাপ বাড়ালেও কাজের কাজ করতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া।