সম্পাদক

আবদুর রহমান

নিউজ ডেস্ক :

মিরপুর শের ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টেস্টের আজ (২৫ ডিসেম্বর) চতুর্থ দিন চলছিল। তবে প্রথম তিন দিনে যতটা না দর্শক ছিল, আজ সকালে তারচেয়ে বেশি দর্শকের সমস্বর আওয়াজে মুখরিত ছিল মিরপুরের হোম অব ক্রিকেট।

সবার আশার পালে জোরেশোরেই হাওয়া বইয়ে দিচ্ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ-সাকিব আল হাসানরা । স্বপ্ন ছিল, ভারতের বিপক্ষে ইতিহাস গড়ে ফেলবে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।

তবে শেষ পর্যন্ত ইতিহাস গড়া হয়নি বাংলাদেশের। দারুণ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও ভারতের বিপক্ষে জেতা হয়নি প্রথম টেস্ট ম্যাচ। ভারতের বিপক্ষে ১৩ ম্যাচ খেলে ১১তম হার নিয়ে মাঠ ছাড়লো বাংলাদেশ।

মাঠে এদিন ভারতের পক্ষে ছিলেন বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি শ্রেয়াস আইয়ার। তবে তিনিই যেন নীরব দর্শক হয়ে গিয়েছিলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সামনে। ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতে কিছুটা খাবি খাচ্ছিলেন অশ্বিন। সেই অশ্বিন যখন মুমিনুল হকের ক্যাচ মিসে জীবন পেলেন।

এরপর একাই ছড়ি ঘুরিয়েছেন বাংলাদেশি বোলারদের উপর। তার অসাধারণ ব্যাটিংয়ের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করে আরেকটি টেস্ট হার নিয়ে মাঠ ছাড়লো সাকিব আল হাসানের দল।

মিরপুর শের ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টেস্ট ম্যাচটি সব আলো কেড়ে নেওয়া শুরু করেছিল তৃতীয় দিন থেকে। এর আগে প্রথম দুই দিনে দুই দল নিজেদের প্রথম ইনিংসে অল আউট হয়েছিল। যেখানে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ইনিংসে করেছিল ২২৭ রান। জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ভারত তুলেছিল ৩১৪ রান।

৮৭ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল বাংলাদেশ। তৃতীয় দিন নিজেদের সব উইকেট হারিয়ে টাইগাররা দ্বিতীয় ইনিংসে তুলেছিল ২৩১ রান। ভারতের বিপক্ষে ১৪৪ রানের লিড নিয়ে থেমে যায় সাকিব আল হাসানরা।

ফলে টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে ভারতের জিততে হলো লক্ষ্য নির্ধারণ হয় ১৪৫ রানের। হাতে সময় ছিল দুই দিনেরও বেশি। মিরপুরের উইকেটে চতুর্থ ইনিংসে এক দিন ব্যাটিংয়ের চিন্তা করাটাই দুঃসাধ্য বটে।

ফলে ভারতকে জিততে হলে দ্রুত রান তুলতে হতো। অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল দ্রুত উইকেট। এই জায়গায় সফল ছিল বাংলাদেশই। ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকে সফরকারীদের দারুণভাবে চেপে ধরেন বাংলাদেশি বোলাররা।

টেস্টের তৃতীয় দিন শেষ বিকেলে ৪৫ রানের মধ্যে ভারতের ৪ উইকেট তুলে নেয় সাকিব এবং মিরাজ। ফলে চতুর্থ দিন ম্যাচ জিততে হলে ভারতের লাগতো ১০০ রান। অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৬ উইকেট।

মিরপুরের উইকেট বলেই তখন থেকে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ। চতুর্থ দিন সকালেও দ্রুত ৩ উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশি বোলাররা। তবে শেষ পর্যন্ত শ্রেয়াস আইয়ার এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিনের অষ্টম উইকেট জুটিতে অবিচ্ছিন্ন ৭১ রানের কাছে হার মানতে হয় বাংলাদেশকে।

অশ্বিন ৪ চার ও ১ ছয়ে অপরাজিত থাকেন ৪২ রানে। অন্য প্রান্তে শ্রেয়াস ২৯ রান করেন ৪ চারের সুবাদে। এই দুইজন ছাড়া ভারতের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ৩৪ রান করেন আক্সার প্যাটেল।

বাংলাদেশের পক্ষে শেষ ইনিংসে পাঁচ উইকেট তুলে নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এটি মিরাজের নবম বারের মতো টেস্টে পাঁচ উইকেট শিকার। এছাড়াও সাকিব নেন ২ উইকেট।