মাদরাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান হলো ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। যা এদেশের আলেম-ওলামাদের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন ছিলো। এই স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিলো মাদরাসা শিক্ষার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন।

বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য কাজ হয়েছে বলে আমার মনে হয় না।যদিও অনেকে দাবি করে থাকেন যে সেশনজট নিরসনে অনেকটাই এগিয়েছেন।

একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কর্মকাণ্ড থাকে।কিন্তু যদি এরকম হয় যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হলো শুধু ফাযিল ও কামিলের পরীক্ষা নেওয়া ও সনদ প্রদান করা।তাহলে তা অত্যন্ত দুঃখ জনক ব্যাপার।একটা বিশ্ববিদ্যালয় মানে একটা বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান।

যদিও কিছুদিন আগে এমফিল, পিএইচডি চালু এবং গবেষণার ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়েছে। যাক একটু দেরিতে হলেও কতৃপক্ষকে অসংখ্য ধন্যবাদ। এর মাধ্যমে মাদরাসা শিক্ষার উচ্চতর স্তরের শিক্ষকদের গবেষণার করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

অপর দিকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু পিছিয়ে নেই। তারা নানামুখী কোর্স চালু করেছেন।নিয়মিত ও প্রফেশনাল অনার্স- মাস্টার্স, এমফিল-পিএইচডি,বিভিন্ন দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ডিপ্লোমা কোর্স ইত্যাদি।

পিছিয়ে নেই বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও তারাতো কোনো কোনো ক্ষেত্রে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এগিয়ে। বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনিস্টিউট (বিএমটিটিআই) সর্বপ্রথম মাদরাসা শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ব্যাচেলর অব মাদরাসা এডুকেশন (বিএমএড) কোর্স চালু করে।

সেই কোর্সটি ব্যাপকভাবে চালু করার কথা ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো এই বিশ্ববিদ্যালয়ের তেমন কোনো পদক্ষেপ চোখে পরেনা!আমি মনে করি ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই সক্ষমতা রয়েছে। এই কোর্সটি ইআরবি চালু করলে মাদরাসার শিক্ষকরা আরো বেশি উপকৃত হইতো।

ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় যেকাজগুলো হাতে নিতে পারে :

১.এমফিল ও পিএইচডি কোর্স চালু করা।(চালু হচ্ছে)

২.গবেষণার ক্ষেত্র তৈরি করা এবং গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানো।

৩.জার্নাল বের করা(চালু হচ্ছে)!

৪.ব্যাচেলর অব মাদরাসা এডুকেশন (বিএমএড) প্রোগ্রাম চালু করা।

৫.ইলমুল কিরআতের উপর ১ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স চালু করা। এই কোর্স চালু করার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা সংশোধন করে ইবতেদায়ী ক্বারী ও সহকারী ক্বারী পদে যে শিক্ষক সংকট চলতেছে তা দ্রুত নিরসন করা।

৬.আরবি ভাষা কোর্স চালু করা।
আরবি ভাষা কোর্সের মাধ্যমে মাদরাসা শিক্ষকদের চারটি যোগ্যতা (শুনা,বলা,কওয়া এবং লেখার)দক্ষতা বৃদ্ধি করা।যাতে তারা পাঠদান আরবিতে করাতে পারেন।অথবা মিডেলিস্টে (আরব বিশ্বে) বাংলাদেশ শ্রমিক ভালো কাজ পেতে পারে সে নিশ্চয়তা প্রদান করা।

৭.আধুনিক আরবি ভাষা ইনিস্টিউট/ আরবি অ্যাকাডেমি চালু করা। এর মাধ্যমে আরবি ভাষার নিয়ন্ত্রণ করা যেমন: আরবি শব্দের প্রতিবর্ণায়ন করা, সঠিক ব্যবহার ও উচ্চারণ ইত্যাদি।

৮.মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আইসিটি [ICT] বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলতে আইসিটি কোর্স চালু করা। মাদরাসা শিক্ষকরা কীভাবে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে কুরআন, হাদিস ও ফিকহ, আদব পাঠদান করাতে পারেন। ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরি ও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম পরিচালনা করা।

৯.মাদরাসার শিক্ষার্থীদের বেকারত্ব দূর করতে বিভিন্ন ক্যারিয়ার উন্নয়নের জন্য কোর্স,চালু করা।

১০.প্রকাশনা(গুরুত্বপূর্ণ আরবি মূল বইগুলো বাংলা ভাষায় অনুবাদ করা)

আব্দুর রহিম
শিক্ষক:সৈয়দ আব্দুল মান্নান ডি.ডি. এফ. আলিম মাদরাসা বরিশাল।

Loading