সম্পাদক
নিউজ ডেস্ক:
শুক্রবার (১২ জুন) সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের পরও সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান থাকা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন। এরপরও শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ায় এর পেছনে তৃতীয় পক্ষের হাত দেখছেন তিনি। কোটা আন্দোলনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ভর করেছে।
তরুণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে পুঁজি করে বিএনপি-জামায়াত অপরাজনীতি এবং ষড়যন্ত্র করছে অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন: সরকারি চাকরিতে কোটা সংরক্ষণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের ওপর চার সপ্তাহের স্থিতাদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের এ আদেশের পরে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের কোনো কার্যকারিতা বর্তমানে নেই। এরপরও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলমান থাকার যৌক্তিকতা নেই।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন: এই আন্দোলনের ওপর মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ভর করেছে। শিক্ষার্থীরা কার বিপক্ষে আন্দোলন করবে? সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশ তো তাদের পক্ষেই আছে। এরপরও আন্দোলন চলমান থাকা প্রমাণ করে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য কোনো গোষ্ঠী বা মহল এই আন্দোলনকে উসকানি দিচ্ছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলন চলমান রাখলে সাধারণ জনগণের ভোগান্তি বাড়ছে। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। জনগণ এই আন্দোলনের কাছে জিম্মি হয়ে পড়লে তরুণ শিক্ষার্থীদের ওপর তারা আস্থাহীন হয়ে পড়বে। একটি চিহ্নিত রাজনৈতিক মহল শিক্ষার্থী ও জনগণের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে ফায়দা লোটার অপচেষ্টা করছে। আমরা বিশ্বাস করি না কোমলমতি সব শিক্ষার্থী দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করতে চায়। শুধু যারা রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তারাই আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা করছে।
এই আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াতের উস্কানি রয়েছে দাবি করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, যেকোনো আন্দোলন হলেই বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসররা সেটাকে হাতিয়ার করে ক্ষমতায় যাওয়ার দুঃস্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়ে। এখন তারা কোটা আন্দোলনে ভর করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কারণ তাদের ওপর জনগণের কোনো আস্থা নেই। তারা যখন ক্ষমতায় ছিল দুর্নীতি, লুটপাট, সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির নেতা তারেক রহমান হাওয়া ভবন খুলে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিলেন। হাজার হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে অবৈধভাবে পাচার করে লন্ডনে বিলাসী জীবনযাপন করছেন। দেশের সাধারণ জনগণের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। এই দুর্নীতিবাজ নেতৃত্বের অপরাজনীতির কারণেই বার বার জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে বিএনপি। সরকারবিরোধী কোনো আন্দোলনেই তারা সফল হতে পারেনি। তাই যখনই অরাজনৈতিক আন্দোলন হয়, সেটাকে পুঁজি করে রাজনীতি করার অপচেষ্টা করে বিএনপি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন কোনো যৌক্তিক দাবি কখনোই আওয়ামী লীগের কাছে উপেক্ষিত হয়নি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে একটি জনকল্যাণকর উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্র বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা তরুণ শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানাবো, আপনারা কারও রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে অপব্যবহারের শিকার হবেন না। চূড়ান্ত শুনানিতে আন্দোলনকারীদের পক্ষের আইনজীবীর আরও যুক্তি-তর্ক উপস্থাপনের সুযোগ রয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত চূড়ান্ত শুনানির মাধ্যমে এ বিষয়ে নিষ্পত্তি করবেন। আদালত আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অসন্তোষের বিষয় চূড়ান্ত শুনানিকালে আমলে নিয়ে বাস্তবসম্মত চূড়ান্ত রায় প্রদান করবেন এবং বিষয়টির নিষ্পত্তি হবে।
আন্দোলনকারীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পারে এ ধরনের সব কর্মসূচি পরিহার করে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী যার যার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।