নিউজ ডেস্ক:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি ঘিরে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যাপক সংঘর্ষ ও হানাহানির ঘটনা ঘটছে। গতকাল রোববার এই কর্মসূচির প্রথম দিনে সরকার-সমর্থক নেতা-কর্মী ও পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে রাজধানী ঢাকাসহ ২০টি জেলা-মহানগরে ১০১ জন নিহত হয়েছেন।
এর মধ্যে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় সন্ত্রাসী হামলায় পুলিশের ১৩ সদস্য এবং কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জে পৃথক হামলায় হাইওয়ে থানার এক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।গতকাল দেশের অন্তত ৫০টি জেলায় সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। বেশির ভাগ জায়গায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে মূলত সংঘর্ষে জড়ান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও দলটির সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। লাঠিসোঁটা ও দেশি অস্ত্রের পাশাপাশি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারীদের প্রতিরোধে রাস্তায় নেমেছিলেন সরকার-সমর্থকেরা। তাঁদের অনেকের হাতে পিস্তল, শটগান, বন্দুক, কাটা রাইফেলের মতো আগ্নেয়াস্ত্র দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। বিক্ষোভকারীদের বেশির ভাগের হাতে ছিল লাঠিসোঁটা। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন শত শত।
এই কর্মসূচি ঘিরে সরকারি দলের মন্ত্রী-এমপিদের বাসা ও পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলার ঘটনাও ঘটছে। শিক্ষার্থীদের অসহযোগ আন্দোলন ঘিরে গতকাল রাজধানী ঢাকা ছিল সারা দেশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন। দূরপাল্লার বাস, ট্রেন ছেড়ে যায়নি। রাজধানীর ভেতরও গণপরিবহন চলাচল ছিল না বললেই চলে।বেশির ভাগ স্থানে সংঘর্ষের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সেভাবে দেখা যায়নি। তাঁরা মূলত সরকারি স্থাপনা রক্ষায় বেশি মনোযোগী ছিলেন। অনেক জায়গায় আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড, ছররা গুলি, রাবার বুলেট ছোড়ে। প্রায় সব স্থানে পুলিশের সঙ্গে ছিলেন সরকারি দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা। দিনভর সংঘর্ষের পর গতকাল সন্ধ্যা ছয়টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ করা হয়। তবে গতকাল রাত ১০টা পর্যন্ত কোথাও কোথাও সংঘর্ষ চলছিল বলে খবর আসে।
অসহযোগ আন্দোলন মোকাবিলায় গতকাল সকাল থেকে জেলা ও মহানগরে পাড়ায় পাড়ায় অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। ফলে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে সংঘাতের আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল আগে থেকেই।