মোঃ শাওন,মাধবদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি:

আমি কোনো রাজনৈতিক দলই সমর্থন করিনা,আমার স্বামী নেই,ঘরে পুরুষ বলতে আমার একটা ছেলে,সেও প্রবাসে।রাজনীতি কি তাও আমরা বুঝিনা,শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর,তারা আমার ঘরে এসে আমাকে না পেয়ে ঘরের সব মালামাল লুটপাট করে নিয়ে গেছে, যা নিয়ে যেতে পারেনি তা ভাঙচুর করে রেখে গেছে। এভাবেই আমাদেরকে বর্ণনা করে কান্নাভেজা স্বরে জানাচ্ছিলেন কুলসুম বেগম।

ঘটনাটি গত ০৭-ই আগস্ট বুধবার দুপুর ২ টায় মাধবদীর বিরামপুর সংলগ্ন বাহাদুরপুর ঈদগাহের কাছে অবস্থিত কুলসুমের নিজ বাড়িতে ঘটেছে বলে জানিয়েছেন, গ্রামটি নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার সাতগ্রাম ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত।

এসময় কুলসুমের বাড়িতে থাকা মেয়ে সুমা আমাদের জানান,বোনের সিজার হওয়ার কারনে তার মা সেদিন হাসপাতালে ছিলেন,বাসায় সুমা ও তার ৩ বছরের সন্তানই ছিল,দুপুর ২টার দিকে বাহাদুরপুর গ্রামের মানিক সরকারের পুত্র সোলমান, গাফফারের পুত্র শেখ সাদি,আব্দুল আলীর পুত্র তানভীর,আবু সিদ্দিক,দেলোয়ার,আতা জামান,রাব্বি সহ ১৫ থেকে ২০ জনের একটা দল ঘরে ঢুকে জানতে চায় কুলসুম কোথায়,তাঁকে না পেয়ে ভাঙচুর করতে থাকে,ঘরে থাকা নগদ ৮০ হাজার টাকা,৩ ভরি স্বর্ণ,৫ ভরি রূপা সহ ঘরের নেওয়ার মতো যা ছিল সব মালামাল নিয়ে চলে যায় তাঁরা।

এসময় কুলসুম আমাদের আরো জানান, বুধবার বেলা ১১ টার দিকে সোলমান ও শেখ সাদি আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে,না দিলে লোকজন নিয়ে এসে ভাঙচুর করবে বলে জানায়,টাকা না দেওয়ায় দুপুর ২ টায় তারা আমার এ ক্ষতি করে গেছে।

এর আগেও তারা আমাকে কু-প্রস্তাব দেয়,আমি অসম্মতি করলেই তাঁরা আমার উপর ক্ষেপে মারধর করে ,এর আগে বিষয়টি থানায় মামলা করলে তাদের কেও কেও জেলও খাটে, জেল থেকে এসেই শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পরই তারা সুযোগ বুঝে আমার এ ক্ষতি করে দিয়ে যায়,আমি এখন আমার বড় মেয়ের বাসায় আছি,নিজের বাড়িতে আমি অনিরাপদ ,আমি নিরাপত্তা চাই এবং এর উপযুক্ত বিচার চাই।

এদিকে কুলসুমের প্রতিবেশি শাহিন জানান,আমার চোখের সামনেই তারা ভাঙচুর ও লুটপাট করে নিয়ে যায়,প্রাণের ভয়ে বাঁধা দিতেও যাইনি।আরেক প্রতিবেশি পারুল জানান,ভাঙচুরের আওয়াজে আমরা ভয়ে ছিলাম,জঘন্য ভাবে ভাঙচুর করে সব মালামাল তারা নিয়ে চলে যায়।এসময় বাহাদুরপুর গ্রামের জসিম উদ্দিন বলেন,অভিযুক্ত ছেলেগুলো জঘন্য খারাপ, তারা কোনো কাজ করেনা এভাবে ধান্দা করেই চলে,তাঁদেরকে উপযুক্ত বিচারের আওতায় আনা হোঁক।

এদিকে কুলসুমের বড় মেয়ে সোহাগি আমাদের জানান,আমার বাবা না থাকায় তারা বিভিন্ন সময় আমাদের উপর নির্যাতন করতে চায়,আমার মা বর্তমান আমার বাড়িতে আছে, সে তার বাড়িতে যেতেও এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে,অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি দাবি করছি।

এদিকে থানায় কোনো পুলিশ না থাকায় তারা বিষয়টি থানায়ও জানাতে পারেনি,বা অভিযোগও করতে পারেনি, ওয়ার্ড মেম্বার এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগের হওয়ায় কাওকেই বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি,তাই বিষয়টি তাদেরও জানাতে পারেনি বলে জানিয়েছেন কুলসুম বেগম।অন্যদিকে কুলসুম বেগমের পুত্র মালয়েশিয়া প্রবাসী সুজন আমাদের ভিডিও বার্তায় জানান,আমরা কখনোই কোনো রাজনীতিতে ছিলাম না,বরং এবার ছাত্রদের আন্দোলনে ছাত্রদের পক্ষ হয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছি,আমি দেশের বাহিরে থাকি দেশে আমার মা- বোন অনিরাপদ, যারা যারা এ ভাঙচুর করেছে তাদের বিচারের আওতায় এনে উপযুক্ত বিচারের দাবি জানাচ্ছি।