ওমর ফারুক

মোঃ আব্দুল খালেক, রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে অর্থ ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পরকিয়া প্রেমিক অমিত হাসান (২২)সহ পলাতক হয়েছেন গৃহবধু মারুফা আকতার (২৩)। গত ১৭ জুন শনিবার বিকালে উপজেলার দাঁতভাঙ্গা গ্রামের স্বামীর বাড়ি থেকে দাঁতভাঙ্গা বাজারে হালখাতার অনুষ্ঠানে টাকা পরিশোধ করতে যাওয়ার কথা বলে পালিয়ে যান ওই গৃহবধু।

শশুর আবু জাহান বাদী হয়ে কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন গৃহবধু ও পরকিয়া প্রেমিকের বিরুদ্ধে।মামলার বাদীর অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, রৌমারী সদর ইউনিয়নের মধ্যইছাকুড়ি গ্রামের আব্দুল মালেকের মেয়ে মারুফার সঙ্গে ২০১৮ সালে দাঁতভাঙ্গা গ্রামের আবু জাহানের ছেলে হারুনের সাথে ইসলামী শরিয়া মোতাবেক বিয়ে হয়।

বিয়ের ২ বছর পর জীবিকা নির্বাহের জন্য সিঙ্গাপুরে চলে যায় হারুন। সিঙ্গাপুর থেকে কর্ম করে প্রতি মাসের বেতনের টাকা স্ত্রীর নামে পাঠাতো। হাতে অনেক অর্থের সুযোগে স্বামীকে ভূলে, প্রেমিক অমিত হাসান নামের ছেলের সাথে পরকীয়ার গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠে। ইতিমধ্যে হারুন পিতার মাধ্যমে পার্শ্ববর্তী গ্রামের ছামিউল ইসলামের কাছ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় ৩৬ শতক ও ৩ লাখ টাকা দিয়ে আজিবর রহমানের কাছ থেকে ৩৭ শতক জমি বন্ধক গ্রহন করে।

অন্যদিকে নিজ বাড়িতে দু’তলা বিশিষ্ট ফাউন্ডেশনে ১ তলা বিল্ডিং ঘর নির্মান করে হারুন। ঘর নির্মান করার জন্য রড, সিমেন্টসহ যাবতীয় মালামাল দাঁতভাঙ্গা বাজারে শহিদুরের দোকান থেকে বাকি হিসাবে ক্রয় করতো। পরে ঘর নির্মান শেষে বসবাস করে আসতো মারুফা।

বছর শেষে শহিদুরের দোকানের হালখাতা শুরু হলে বাকির মোট সাড়ে ৫ লাখ টাকা পরিশোধে হালখাতার চিঠি দেন। হালখাতার টাকা পরিশোধের জন্য বন্ধকী জমি নেয়া আজিবর ও ছামিউলের নিকট থেকে ফেরত সাড়ে ৫ লাখ টাকা গ্রহন করে। বাড়িতে থাকা পিতা আবু জাহানকে হালখাতার সাড়ে ৫ লাখ টাকা পরিশোধের কথা বললে। আবু জাহান অসুস্থ থাকায় পুত্রবধু মারুফাকে টাকা নিয়ে হালখাতার টাকা পরিশোধের জন্য যেতে বলেন।

গত ১৭ জুন আনুমানিক বিকাল ৫ টার সময় পরকিয়া প্রেমিক অমিত হাসানের সাথে যোগাযোগ করে বিয়েতে মারুফাকে দেয়া স্বর্ণের গলার চেইন,কানের দুল, হাতের বালা, যাহার ওজন ৪ ভরি, মুল্য অনুমান ৪ লাখ টাকা এবং হালখাতার পরিশোধ না করা সাড়ে ৫ লাখ টাকা নিয়ে বাপের বাড়ি ইছাকুড়িতে পালিয়ে যায়।

দোকানে হালখাতার টাকা পরিশোধ করে আসতে দেরি হতে দেখে শশুর আবু জাহান ও ভাশুর এরশাদুল খোজ খবর নেয়। দোকানের মালিক শহিদুর জানায় হালখাতার টাকা পরিশোধ করতে আসেনি মারুফা। এক পর্যায়ে জানা যায়, বাপের বাড়ি ইছাকুড়ি চলে গেছে।

তৎক্ষনাত ইছাকুড়ি গ্রামে মারুফার বাড়িতে খোজ খবর নিতে গিয়ে দেখা যায় তার শয়ন ঘরে পরকিয়া প্রেমিক অমিত হাসান ও মারুফা টাকা পয়সা নিয়ে পালানোর পরিকল্পনা করার সময় হাতে নাতে আটক করে।

এমতাবস্থায় মারুফার কাছে থাকা হালখাতা পরিশোধের সাড়ে ৫ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার স্থানীয় ভাবে আপোষ মিমাংশার মাধ্যমে ফেরত চাইলে দিতে অস্বীকার করে। এমন ঘটনায় নগদ সাড়ে ৫ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার ৪ ভরি ফেরত পেতে বিজ্ঞ আদালতে বৌ মারুফা, পরকিয়া প্রেমিক অমিত হাসানসহ ৫ জনকে আসামী করে আবু জাহান বাদী হয়ে কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেন।