
আবদুর রউফ আশরাফ
ঈদ মানে খুশি। ঈদ মানে আনন্দ। আনন্দ উচ্ছ্বাস আর খুশির বার্তা নিয়ে প্রতিবারের মতো এবারও ফিরে এলো ঈদুল ফিতর।
দীর্ঘ এক মাস সিয়াম তথা রোজাব্রত পালনের পর খুশির বার্তা নিয়ে মুসলিম উম্মাহের হৃদয়ে ধ্বর্নি তুলছে ঈদ মোবারক।
ঈদের উচ্ছ্বাস ঘুচিয়ে দেয় অন্ধকার। আলোকিত হয়ে ওঠে মানুষের হৃদয় ও মন। দুঃখ-কষ্ট বেদনার নিগড় থেকে মুক্ত শুদ্ধ অন্তরে নেমে আসে শান্তি। মানুষের মধ্যকার দুঃখ-কষ্ট আর গ্লানিবোধ ঝেড়ে ফেলে সমাজবদ্ধ মানুষ মেতে ওঠে আনন্দ উৎসবে। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠাই ঈদুল ফিতরের শিক্ষা। একাকী আনন্দ উপভোগ করার মধ্যে তৃপ্তি নেই। পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধু-সজন, পরিবার ও আপনজন মিলে আনন্দ করার মজাই আলাদা।
ঈদুল ফিতর মুসলিম উম্মাহকে সাম্য, মৈত্রী, ঐক্য এবং ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধ শিক্ষা দেয়। এভাবে ঈদুল ফিতরের উৎসব ইসলামী জীবন পদ্ধতির ভিত্তিতে একটি বিশ্বজনীন নীতির ওপর গুরুত্বারোপ করে থাকে। এ আনন্দের দিনে প্রতিটি মুসলিম তার সামাজিক অবস্থান ভুলে যায় এবং ভ্রাতৃত্ববোধের পর তৃপ্তিতে একে অপরকে আলিঙ্গন করে। পার্থক্য থাকে না ধনী-দরিদ্র, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, সবল-দুর্বল, বংশ গৌরব, কৌলিন্য ও মান-মর্যাদা। ঈদগাহে সারিবদ্ধভাবে জামাতের সঙ্গে ঈদুুল ফিতরের দু’ই রাকাত ওয়াজিব নামায আদায়ের মধ্য দিয়ে প্রকৃতপক্ষেই সাম্যের অতুলনীয় বাস্তব দৃশ্যের চিত্র ফুটে ওঠে।
মুসলমানের জন্য ঈদ একটি মহা ইবাদতও। ঈদের ইবাদতে শরীয়ত নির্দেশিত কিছু বিধি-বিধান রয়েছে, যা পালনে সামাজিক জীবনে পারস্পরিক আন্তরিকতা, সহমর্মিতা ও বন্ধন সুসংহত হয়। ঈদুল ফিতরের শরীয়ত দিক হলো, ঈদের নামাযের পূর্বে রোযার ফিতরানা ও ফিদিয়া আদায় করা, ঈদ গাহে দু’ রাকাত নামায আদায় করা, খুতবা শুনা এবং উচ্চস্বরে তাকবির পাঠ করা। ঈদে আমাদের দৈহিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধি ঘটে আর পরস্পরের মাঝে ঈমানী ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি হয় এবং নিজেদের মাঝে হিংসা বিদ্বেষ দূর হয়ে এক স্বগীর্য় পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
ঈদ বয়ে আনুক অনাবিল সুখ-শান্তি সমৃদ্ধি। মুসলিম উম্মাহ, ভ্রাতৃত্ববোধের বন্ধনে আবদ্ধ হউক।