
নিউজ ডেস্ক
শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই তো আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করে গেছেন। উনি ১৯৭৫ সালের জানুয়ারিতে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। যুগান্তর মাল্টিমিডিয়ার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকালে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল্লাহিল আমান আযমী এ কথা বলেন।
আযমী বলেন, আমাদের সুখী সমৃদ্ধিশালী বাংলাদেশের চেতনা ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের। যারা প্রকৃত দেশপ্রেম দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। এ প্রজন্মের জেন-জি দেশপ্রেম দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছে। আজ পর্যন্ত কেউ দাবি করেননি কিন্তু আমি দাবি করেছি- এ প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধাদের; আমাদের যে খেতাব আছে আবু সাঈদসহ যারা জীবন দিয়েছেন তাদের বীরশ্রেষ্ঠ, বীরউত্তম, বীরপ্রতীক খেতাব দিতে হবে। তা না হলে এ বিপ্লবের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। কারণ ওই সময় সেনাবাহিনী ইপিআর, আনসার ও পুলিশ যারা ছিলেন তারা সব প্রশিক্ষিত ও সশস্ত্র ছিলেন। যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন তারা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং সশস্ত্র ছিলেন। আর এ যে প্রজন্মের যারা যুদ্ধ করেছেন তারা প্রশিক্ষিতও না সশস্ত্রও না। শুধু দেশপ্রেম দিয়ে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছেন। তো তাদের কৃতিত্ব কম কেন হবে- তারা ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করেছে; তারা দেশকে অন্ধকার যুগ থেকে মুক্তি দিয়েছে। তো আমি বলতে চাচ্ছি আমাদের সেই যে চেতনা, সুখী ও সমৃদ্ধশালী- এ প্রজন্মের যারা মুক্তিযোদ্ধা তারাও কিন্তু ওই স্বপ্ন নিয়েই জীবন দিয়েছেন- সুখী বাংলাদেশের জন্য। এটার জন্য আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন- সেটা হলো আমাদের ভারতের করাল গ্রাস থেকে মুক্ত হতে হবে। ভারতের হাত থেকে মুক্ত হতে হলে আমাদের এ আওয়ামী ফ্যাসিবাদের হাত থেকে মুক্ত হতে হবে। যারা তাদের পুনর্বাসনের চিন্তা করে তারা দেশের শত্রু। ছাত্রলীগ যদি নিষিদ্ধ হয়ে থাকে আওয়ামী লীগ কেন নিষিদ্ধ হবে না? বৃক্ষ তোমার নাম কী ফলে পরিচয়। ছাত্রলীগ তো আওয়ামী লীগের ফল। ছাত্রলীগ তো আর বড় ফ্যাসিস্ট।
তিনি বলেন, এদের তো নিষিদ্ধ করার কোনো বিকল্প নাই। তারা যখনই ক্ষমতায় থেকেছে যা ইচ্ছা তাই করেছে। বেশি দূরে যেতে হবে আপনি ২০০৯ থেকে ২৪ পর্যন্ত দেখেন- তারা কিনা করেছে। তারা হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে। সোহেল তাজ একটা সাক্ষাৎকার বলেছেন- সাবেক পলাতক প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) বলেছেন- ‘তোমরা যে যত পার খাও’। আব্বা এ সময় বলেছিলেন- মানুষের জিহ্বাটা হলো বড় দুশমন। এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জিহ্বাটা তার সবচেয়ে বড় দুশমন। সে তার সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছে। সমস্ত বিশ্বে যখনই একটা নির্বাচন হয় যে দল জিতে বিরোধী দল যারা হয়- ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিরোধী নেতা বিবৃতি দেন- আমরা অভিনন্দন জানাই এবং সর্বত্র সহযোগিতা করব।
আযমী বলেন, ১৯৯১ সালে যখন জামায়াতের সঙ্গে বিএনপি ক্ষমতায়- পর দিনই পত্রিকায় খবর আসে এক মুহূর্ত শান্তিতে থাকতে দেব না। এটা কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের পরিচয়। তো আমাদের ভারতের করাল গ্রাসমুক্ত না থাকতে পারলে সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখা অলিক হবে। এটার জন্য আমাদের আওয়ামী মুক্ত থাকতে হবে। সুতরাং তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে। শেখ সাহেব নিজেই তো আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করে দিয়ে যান। উনি ৭৫ সালের জানুয়ারিতে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। এটা কেউ কোনোদিন বলেননি কেন আমার কাছে আশ্চর্য লাগে। এ আওয়ামী লীগ তো অবৈধ আওয়ামী লীগ। সূত্র: যুগান্তর