বিজয় কর রতন
মিঠামইন (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি

মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের চমকপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রসার অধ্যক্ষ ও উপজেলা ওলামালীগ সভাপতি ইয়াকুব আলী বরণীর বিরুদ্ধে ২০ লক্ষাধিক টাকা আত্বসাতের অভিযোগ পাওয়া গিয়াছে ।

এব্যাপারে মাদ্রসার পরিচালনা কমিটির সাবেক সদস্য হুমায়ুন কবির ও একই মাদ্রসার ল্যাব অপারেটর তারেক মিয়া  বিগত ১/১২/২০২৪ ইং বাদি হয়ে উপপরিচালক দূর্ণীতি দমন কমিশন, জেলা প্রশাসক,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর পৃথক দুটি অভিযোগ দায়ের করছেন।

এছাড়াও মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ইয়াকুব আলী বরণীর বিরুদ্ধে বিগত ৫ ই আগষ্ট মিঠামইনে বিএনপি অফিস ভাংচুরের মামলা রয়েছে।মিঠামইন থানা মামলা নং ২ তারিখ ৯/০৯/২০২৪।ঐ মামলায় তিনি বিগত ২৯ শে মার্চ ঘাগড়া বাজার থেকে গ্রেফতার হন।বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন।অভিযোগকারী, হুমায়ুন কবির ও তারেক নিয়া জানান,অভিযোগ খানী তদন্তের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ২ ডিসেম্বর ৭৫২ নং পএ মোতাবেক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহজাহান সিরাজকে তদন্ত করে রিপোর্ট পেশ করার জন্য নির্দেশ দেন।

মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অভিযোগ কারী গণ কে বিগত ৩১ শে ডিসেম্বর চমকপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় প্রমানাদি সহ উপস্থিত থাকার জন্য নোটিশ প্রদান করেন।যথারীতি অভিযোগ কারী গণ যাবতীয় প্রমাণ সহ কাগজপএ, বিল ভাউচার,তদন্ত কারী কর্মকর্তার নিকট উপস্থাপন করেন।

রিপোর্ট তদন্তের পর শিক্ষা অফিসের খোঁজ  নিতে গেলে শিক্ষা কর্মকর্তা নানান কথা বলে তদন্ত রিপোর্ট খানী আটকে রেখে অন্যএ বদলি হয়ে যান। দীর্ঘ ৫ মাসেও তদন্ত রিপোর্ট পেশ করা হয়নি।আদৌ তদন্ত রিপোর্ট আলোর মুখ দেখবে কিনা এ নিয়ে অভিযোগ কারীরা শংকায় রয়েছেন।গত ১৮ মে রবিবার চমকপুর ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় অভিভাবক, শিক্ষক, এলাকার সচেতন নাগরিক, মুক্তিযোদ্ধা সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক অধ্যক্ষ ইয়াকুব আলী বরণীর কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।

তার বিচার না হওয়া পর্যন্ত তাকে মাদ্রাসায় ডুকতে দেওয়া হবে না।অভিযোগ কারী হুমায়ুন কবির ও তারেক মিয়া তাদের অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, ২০১০ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অএ মাদ্রাসায় তিনি নিয়োগ প্রাপ্ত হন।তিনি উপজেলা ওলামা লীগের সভাপতি।

দলীয় প্রভাব বিস্তার করে তৎকালীন সময়ে এসকল দূর্ণীতি ও অনিয়ম করেছেন। কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সাহেবের পরিবারের সঙ্গে সখ্যতার সুবাদে এসকল অপকর্ম করেছেন । তার দূর্ণীতির কিছু চিএ অভিযোগকারী রা তুলে ধরেছেন।টিউশন ফি এর কাজে অফিস থেকে ২৮২৯০ টাকা নিয়ে যান।

২০১৯ সালে মাদ্রাসার অডিট এর জন্য ঘুষ দেওয়ার কথা বলে শিক্ষক কর্মচারীর বেতব থেকে ৩ লক্ষ টাকা নিয়ে যায়। বিগত  ১৯/১/২০২৪ ইং পরিচালনা কমিটির মেয়াদ শেষ হয়।কিন্তু কমিটির তৎকালীন সভাপতির স্বাক্ষর দিয়ে ৩০/০১/২০২৪ ও ০৬/০২/২০২৪ ইং তারিখ জনতা ব্যাংজ ঘাগড়া শাখা থেকে দুটি চেক এর মাধ্যমে ২ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা উওোলন  করে নিয়ে যায়।

কিন্তু কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ঐসময় শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা উওোলনের স্বাক্ষর নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট থেকে। মাদ্রাসার প্রশংসা পএ বিতরণের সময় প্রতি ছাএছাএীর নিকট থেকে কোনো রশিদ ছাড়া ১ হাজার করে টাকা নেন।জেডিসির সনদ বিতরণের সময় একই কায়দায় ১ হাজার করে টাকা হাতিয়ে নেন।এমনি ভাবে ১৫ বছর যাবৎ নিয়েছেব।যাহা প্রায় ৭ লক্ষ টাকা। 

দাখিল পরীক্ষা ফরম পূরণে নিতেন ৫ হাজার টাকা।কিন্তু রশিদ দিতেন ১৮০০ টাকার। এর পর ক্যাশ থেকে ভাউচার বিহীন হাজার হাজার টাকা উওোলন করে নিজে ব্যায় করতেন।মাদ্রাসা পুকুর ভরাটের জন্য তৎকালীন সংসদ সদস্য ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেন।কিন্তু উক্ত টাকা তিনি মাদ্রাসার ক্যাশ থেকে নিয়ে ভুয়া ভাউচারে সমস্ত টাকা আত্বসাত করেন।

কমিটি গঠন,নবায়ন, অনুমোদন, টিউশন ফি সহ  অন্যান্য কাজে কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার কথা বলে তহবিল থেকে টাকা উওোলন করে নিজে ব্যায় করেন।২০২২/২৩ অর্থ বছরে মাদ্রাসা খানী আলিম পাঠদানের অনুমতি নিতে ৩ লক্ষ টাকা ঘুষ দেওয়ার ভাউচার করে ফেলেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন খাত দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্বসাত করেছেন। 

অভিযুক্ত মাদ্রাসা অধ্যক্ষ ইয়াকুব আলী বরণীকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আওয়ামী লীগ করার কারণে তারা এসকল অভিযোগ দায়ের করছেন। তিনি কোনো দূর্ণীতি করে নাই বলে দাবী করেন।মাদ্রাসার অফিস কক্ষে  তালা দেওয়া সিদ্ধান্ত হয়েছে তিনি শুনেছেন।

মাদ্রাসার বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুর্শিদুল আলন জানান,অভিযোগ কারী হুমায়ুন কবির ও তারেক মিয়ার অভিযোগ সত্য। ইয়াকুব আলী বরণী অধ্যক্ষ থাকাকালীন সময়ে নানান অনিয়ম ও দূর্ণীতি করছেন। তখনকার সময় দলীয় প্রভাবের কারণে কেউ কিছু বলতে সাহস পায়নি।শুধু মাএ ১৫ বছরে ছাএ ছাএীদের প্রশংসা পএ ও সনদ বিতরণে ৭ লক্ষ টাকা আত্বসাদ করছেন।

এসকল টাকার কোনো ভাউচার নেই।এলাকাবাসী দূর্ণীতি ও অনিয়মের বিচার প্রার্থী। এব্যাপারে মাদ্রাসায় একটি সভাও হয়েছে। তিনি আরও জানান,এলাকার সুশীল সমাজ, শিক্ষক,অভিভাবক সহ অন্যান্য শ্রেণী পেশার মানুষ তার প্রতি ক্ষোদ্ধ।দূর্ণীতির বিচার না হওয়া পর্যন্ত যেন মাদ্রাসায় না আসে এর জন্য তার কক্ষে তালা ঝুলিয়েছেন গ্রামবাসী।

তদন্তকারী কর্মকর্তা মো:শাহজাহান সিরাজের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি বাজিতপুর বদলি হয়ে গেছেন।আসার সময় অতিরিক্ত দায়িত্বে অষ্টগ্রামের মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূরে আলমকে তদন্ত রিপোর্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন। তিনি পেশ করেছেন কিনা জানি না।

ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূরে আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না।এছাড়াও তিনি হজ্বে যাওয়ার জন্য ছুটি নিয়েছেন।এব্যাপারে এর বেশি কিছু বলতে পারবে না।

মিঠামইন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খাঁন মো : আব্দুল্লা আল মামুন এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি জানান, বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা ক