
সম্পাদক
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে এবার সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা। কটিয়াদী উপজেলার একটি পৌরসভা ও নয়টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে দুল খাচ্ছে হলুদ সরিষা ফুলের ঢেউ। দূর থেকে মনে হয় কৃষকের জমিতে হলুদ ফুলের চাদর বিছানো,যার ফলে সরিষার হলুদ ফুলের হাসিতে ভরে উঠেছে কৃষকদেরর মন। এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার ভালো ফলনে কৃষকদের চোখে আনন্দের হাসি।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সরিষার মাঠগুলো সরিষার হলুদ ফুলের আভায় হলুদ রঙের অপরূপ দৃশ্য। কটিয়াদী উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় , চলতি বছর ৩৬৫হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।যা গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় ৫০ সেক্টর জমিতে বেশি সরিষার আবাদ হয়েছে। সাধারণত আমাদের দেশ সরিষায় আমদানি নির্ভর। আর এই আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সরকারের সাথে সাথে কৃষকরা ও ঝুকছে সরিষা চাষে। সরকারিভাবে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে প্রণোদনার আওতায় কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলায় স্থানীয় সরিষার জাত ছাড়াও উচ্চ ফলনশীল বারি সরিষা -১৪,বারি সরিষা-১৭,বাড়ি বিনা সরিষা -৯ ওবিনা সরিষা -১১ জাতের সরিষার আবাদ হয়েছে। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত সরিষা বীজ বপন করা হয়ে থাকে। কোনরূপ প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় , সরিষা এবার ভালো ফলনের আশা করছেন স্থানীয় কৃষকরা এবং বাজার মূল্য ভালো থাকায় কৃষকরা এবার বেশি লাভবানের আশা ও করছেন।
স্থানীয় কৃষক আব্দুল হামিদ মিয়া ও বিল্লাল মিয়া বলেন, আমরা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে সরিষা বীজ সংগ্রহ করেছি। আমন ধান কেটে সরিষার চাষ করেছি।সংসারের সরিষার তেলের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি সরিষার দানা থেকে তেল নিষ্কাশনের পর পাওয়া যায় খৈল,যা গরুর খাদ্য এবং জৈব সার হিসেবে সবজির জমিতে ব্যবহার করা যায়। তাছাড়া সরিষার গাছের পাতা ও ফুলের পাপড়ি পচে উৎকৃষ্ট জৈব সার তৈরি হয় এবং শুকনা সরিষার গাছ জ্বালানির কাজে ব্যবহৃত হয়। সরিষার চাষের খরচ ও খুব কম হয়। আমরা সহ যারা এবার সরিষার চাষ করেছি, প্রত্যেকেরই ফলন খুবই ভালো হয়েছে।
কটিয়াদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা , কৃষিবিদ শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় একটি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নে ৩৬৫হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে । গত বছরে আবাদ হয়েছিল ৩২০ হেক্টর জমিতে। সরিষার চাষে নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবনে উচ্চ ফলনশীল বারি সরিষা -১৪ বারি সরিষা- ১৭ বারি বিনা -৯ও বিনা সরিষা- ১১জাতের সরিষার বীজ ও সার কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করেছি। আমরা সব সময় চাষীদেরকে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি, যার ফলে এখানে আগের চেয়ে ও কম সময়ে এবং কম খরচে সরিষা ঘরে তুলতে পারছেন কৃষকরা।
এদিকে কৃষকরা জানান সরিষা কাটা ও মারাই শুরু হতে আরো কয়েকদিন বাকি। বর্তমানে তেল কলের মালিকরাই সরিষার প্রধান ক্রেতা। মধ্যসত্ত ভোগী ফরিয়াদের খপ্পরে পড়ে কৃষকরা বেশিরভাগ সময় ফসলের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তিতে বঞ্চিত হন। এবার বাজারে সরিষার চাহিদা ও মূল্যবৃদ্ধির ফলে কৃষকরা সরিষা চাষের দিকে অধিক-ঝুকে পড়েছেন।